১৬ ডিসেম্বর গৌরব ও অহংকারের মহান বিজয় দিবস - News Daily Bangladesh-Latest Online Popular Bangla Newspaper

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, June 29, 2022

১৬ ডিসেম্বর গৌরব ও অহংকারের মহান বিজয় দিবস


আজ ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস। সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের দিন বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে। দীর্ঘ নয় মাস বিভীষিকাময় সময়ের পরিসমাপ্তির দিন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ৪৯ বছর আগে এ দিনে এসেছিল বাংলার স্বাধীনতা। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের অস্তিত্ব পৃথিবীর মানচিত্রে প্রতিষ্ঠার চিরস্মরণীয় দিন। এই দেশে এক নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে  একাত্তরের ৭ মার্চ ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে জাতিকে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য অস্ত্র সমর্পণ করেছিল বাঙালির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজয় মেনে নিয়ে মাথা নত করে। দেশের বীর সন্তানদের জাতি আজ কৃতজ্ঞ সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করবে। জনতার ঢল নামবে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বিজয় দিবসে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে। বিজয়ের ৪৯ বছর পেরিয়ে এবার ৫০তম বিজয় দিবস। ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে এবারের বিজয় দিবস এসেছে। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং এর পরের বছর ২০২১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে বাংলাদেশ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি বাণীতে তাঁরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের আত্মত্যাগের কথা, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অজিত হয়েছিল। এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে মহান বিজয় দিবস উদযাপনে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো সন্ধ্যায় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে।

এদিন সংবাদপত্রগুলো দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্প্রচার করবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করবে।

দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা ও সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। অনুরূপভাবে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করবে অন্যান্য রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে- সূর্যোদয় ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন।

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সকাল ৯টায় পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সকাল সাড়ে ৯টায় শ্রদ্ধা নিবেদন, জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। এদিকে বিকাল ৩টায় বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সারা দেশে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

আজ ভোরে নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিএনপির উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে যোগ দেবেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। বিএনপির উদ্যোগে বেলা সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আলোচনা সভায় অংশ নেবেন। আজ ভোরে দেশব্যাপী বিএনপির কার্যালয়গুলোতে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। স্থানীয় সুবিধাজনক সময়ে বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে দেশব্যাপী বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনঃ অনুসরণ করতে হবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ: রাষ্ট্রপতি

এ ছাড়াও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ-’৭১, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাসদ, বিকল্পধারা, এলডিপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, গণতান্ত্রিক বাম জোট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্কসবাদী) ও জাকের পার্টিসহ বিভিন্ন দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, নজরুল একাডেমি, ছায়ানট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মহিলা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। 


1 comment:

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here