হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা শীতে বাড়ে। নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ যদিও এ বিষয়ে নেই। তবে অনেক বিশেষজ্ঞরাই ধারণা করেন, হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন হৃদযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে, শীতে হার্ট অ্যাটাক ছাড়াও হার্টের অন্যান্য সমস্যাসহ স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই।
হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হৃৎপিণ্ডে রক্তের অভাবের কারণে হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের রোগী দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হতে পারেন। এজন্য হার্ট অ্যাটাক হলে নিজেকে ও অন্যকে তাৎক্ষণিক কীভাবে সাহায্য করবেন তা জেনে রাখুন।
হার্ট আটাকের লক্ষণঃ
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের স্টেমি প্রোগ্রামের একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ও ডিরেক্টর ডা. গ্রান্ট রিড বলেছেন, ‘হার্ট অ্যাটাকের পরে আপনি কত দ্র্রুত সুস্থ হতে পারবেন তা নির্ভর করে লক্ষণগুলো কত দ্রুত চিনতে পারবেন।’
অস্বস্তি বা চাপের উপসর্গ, সাধারণ বুকে ব্যথা ছাড়াও, হার্ট অ্যাটাক নারী-পুরুষ কিংবা ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। এর মধ্যে বদহজম বা বমি বমি ভাব, চরম ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট ও অসুস্থ বোধ করা অন্তর্ভুক্ত।
অ্যাম্বুলেন্সে কল করুনঃ
চিকিৎসকরা সুপারিশ করেন, আপনি যদি উপরের উপসর্গগুলোর মধ্যে কোনটি অনুভব করেন, এমনকি যদি আপনি নিশ্চিত না হন যে এটি একটি হার্ট অ্যাটাক, তবুও আপনার অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স কল করা উচিত। ডা. গ্রান্ট রিড জানান, অনেক রোগী তাদের উপসর্গগুলো উপেক্ষা করেন। ফলে তাদের হার্টের পেশি হাসপাতালে যেতে যেতেই মারা যায়।
আপনি যত দ্রুত হাসপাতালে যাবেন তত তাড়াতাড়ি ডাক্তাররা কত অবরুদ্ধ করোনারি ধমনী খুলে দিতে পারেন। এতে আপনার মৃত্যুঝুঁকি কমবে ও সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন দ্রুত। সময় যত কম, ফলাফল তত ভালো।
অ্যাসপিরিন গ্রহণ করুনঃ
উইসকনসিনের ইও ক্লেয়ারের মায়ো ক্লিনিক হেলথ সিস্টেমের কার্ডিওলজিস্ট ড. জোয়েল বিচি বলেন, ‘হার্ট অ্যাটাক হতেই অ্যাম্বুলেন্সে কল করার পর ৩২৫ মিলিগ্রামের অ্যাসপিরিন ডোজ নিন।
সময় ধমনীতে রক্ত প্রবাহকে ব্লক করে দেয় হার্ট অ্যাটাকের। অ্যাসপিরিন গ্রহণ করা ধমনীর রক্তের জমাট বাঁধার কিছু অংশ ভেঙে দিতে সাহায্য করতে পারে। চিকিৎসকরা অ্যাসপিরিন গিলে ফেলার পরিবর্তে চিবানোর পরামর্শ দেন, যাতে এটি দ্রুত শরীরে প্রবেশ করে।
একা হাসপাতালে যাবেন নাঃ
যদি মনে করেন আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তাহলে নিজেই হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। এর পরিবর্তে অবিলম্বে একটি অ্যাম্বুলেন্স কল করুন। আপনি চেতনা হারাতে পারেন, তাই এই ঝুঁকি নেবেন না। যদি পরিবারের কাউকে পাশে পান তাহলে তাকে বলুন আপনাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া ব্যবস্থা করতে।
রোগী অজ্ঞান হলে সিপিআর দিনঃ
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি শ্বাস-প্রশ্বাস না থাকে বা আপনি নাড়ি খুঁজে না পান, তাহলে রক্ত প্রবাহিত রাখতে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করুন। তার আগে অবশ্যই অ্যাম্বুলেন্সে কল করুন। হ্যান্ডস-অনলি সিপিআরের জন্য আপনাকে ব্যক্তির বুকের মাঝখানে দ্রুত ছন্দে জোরে জোরে দ্রুত ধাক্কা দিতে হবে, যতক্ষণ না প্যারামেডিকরা আসেন ততক্ষণ পর্যন্ত। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০-২০০ কম্প্রেশন দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment