সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়া অংশে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ, তাই অলস পড়ে আছে কয়েক শ রঙিন নৌকা। ৮৪ কিলোমিটারের দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ সড়ক রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের পাশে। শত শত রঙিন নৌকা সাজানো অবস্থায় পড়ে আছে সড়কের ওপর এবং পশ্চিম পাশে সমুদ্রের দিকে ঝাউবাগানের কাছে। স্থানীয় লোকজন বলেন ডিঙি নৌকা। ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা ছবি কিংবা সেলফি তুলছেন নৌকার পাশে দাঁড়িয়ে। নৌকার মালিক ও জেলেশ্রমিকেরা আছেন মহাবিপদে যদিও নৌকাগুলো এখন বিনোদনের খোরাক। আর্থিক টানাপোড়েনে সময় পার করছেন গত ১ মাস ধরে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে না পারায়। সরকারি নিষেধাজ্ঞায়ে টানা ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরা বন্ধ কর্মসূচি চলছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন টেকনাফ উপজেলার তিন হাজার নৌকার অন্তত ৪০ হাজার জেলে। পাশের উপজেলা উখিয়ারও কয়েক হাজার জেলে পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।
সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে আগামী আরও এক মাস। পরিবারগুলো চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছে তখন জেলেদের কী অবস্থা হবে এই ভেবে। পাশের ঝাউবাগানের ভেতরে রাখা হয়েছে অসংখ্য নৌকা। নৌকায় নেই কোনো জেলে। নেই মাছ ধরার জাল। ৫-৭টা নৌকা মিলে পাহারা দিচ্ছেন একজন করে জেলে। বিকেলে উখিয়ার রেজুখালের রেজুব্রিজ এলাকায় দেখা গেছে শতাধিক নৌকা। মহেশখালীয়াপাড়ার জেলে আবুল কালাম (৪০) বলেন, ডিঙি নৌকাগুলো সমুদ্রের এক কিলোমিটারে গিয়ে ছোট আকৃতির লইট্যা, পোপা, ছুরি, ছিটকিরি, ফাইস্যা, চিংড়ি, বাটামাছ ধরে আনা হয়। এসব মাছ ধরা হয় দিনের বেলায়। তারপর মাছগুলো বিক্রি হয় বালুচরে। ৮০ শতাংশ মাছ টেকনাফ, উখিয়া ও কক্সবাজার শহরের হাটবাজারে বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম ও ঢাকায়ও কিছু মাছ সরবরাহ হয় স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে। এখন এক মাস ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় স্থানীয় হাটবাজারে মাছের তীব্র সংকট চলছে। অন্যদিকে বেকার জেলেদের হাহাকার অবস্থা।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ইয়াবা চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল থেকে গত দুই বছর টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছিতে দৈনিক ভিত্তিতে ডিঙি নৌকার জেলেদের মাছ ধরাও বন্ধ আছে। এতে ৪০ হাজার জেলে পরিবারে অভাব-অনটন ও হতাশা দেখা দিয়েছে। টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে সরকারি সিদ্ধান্তেই। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে। শিগগিরই জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন।
[…] […]
ReplyDelete