আমরা একজন নবজাতক দুনিয়াতে এলে তার জন্য আকিকা করে থাকি। ইমামদের মতে, "আকিকা" একটি মুস্তাহাব আমল। তাই নবজাতক সন্তানের পিতার পক্ষে আল্লাহর শুকরিয়া আদায়পূর্বক কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ আকিকা করা মুস্তাহাব।
যদি নবজাতকের পিতার পক্ষে সম্ভব হয় তাহলে নবজাতকের জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা উচিত। কেননা এটাই উত্তম। একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও স্বয়ং সপ্তম দিনে আকিকা করতেন। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চতুর্দশতম দিনে আকিকা করবে। তাও সম্ভব না হলে একবিংশতম দিনে, তাও সম্ভব না হলে যে কোনো দিন সম্ভব হয় করবে। অবশ্য এক্ষেত্রে জন্মের সপ্তম দিনের প্রতি লক্ষ রাখা উত্তম।
একটি হাদিসে এসেছে, হজরত কুরজ (রা.)-এর পিতামাতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত আবদুর রহমান ইবন আবু বকর (রা.) বংশের একজন মহিলার মানত যে, আবদুর রহমানের স্ত্রীর কোনো সন্তান হলে আমার একটি উট জবেহ করব। হজরত আয়েশা (রা.) (এ কথা শুনে) বললেন, এ তো হতে পারে না। বরং সুন্নত হলো ছেলে সন্তানের জন্ম হলে দুটি কম বয়স্ক ছাগল আর মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল আকিকা করবে। অবশ্য এই আকিকা জন্মের সপ্তম দিন হলে উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চতুর্দশতম দিনে, তাও সম্ভব না হলে একবিংশতম দিনে আকিকা করবে।
নবজাতক সন্তান ছেলে হলে দুটি ছাগল, ভেড়া অথবা গরু-মহিষের দুই অংশ আকিকা করবে। আর সন্তান মেয়ে হলে একটি ছাগল, ভেড়া অথবা গরু-মহিষের এক অংশ আকিকা করবে। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে নবজাতক ছেলে সন্তানের জন্য দুটি সমবয়সী ছাগল আর মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল আকিকা করার জন্য নির্দেশ করেছেন।
আরও পড়ুনঃ যেমন ছিল মহানবী (সা.)-এর মেহমানদারি
কোরবানির মতো আকিকার পশুর গোশতও তিন ভাগ করে এক-তৃতীয়াংশ নিজের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনদের জন্য সাদাকা করে দিয়ে বাকি এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া সুন্নত। আকিকার গোশত সচ্ছল আত্মীয়স্বজনকেও দেওয়া যায়। আকিকার মাধ্যমে দানশীলতার বিকাশ ঘটে। গরিব, মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় হয়। পরস্পরে হূদ্যতা ও আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে ওঠে। আপসে ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হয়।
No comments:
Post a Comment