রকি জেল খাটছেন আজাদ হয়ে এ যেন বাস্তবের ‘আয়নাবাজি’! - News Daily Bangladesh-Latest Online Popular Bangla Newspaper

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Monday, November 16, 2020

রকি জেল খাটছেন আজাদ হয়ে এ যেন বাস্তবের ‘আয়নাবাজি’!


চট্টগ্রামে এবার সিনেমার মতো ‘আয়নাবাজি’ ঘটনা ঘটল। মো. আজাদ (৩০) মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে দায়ের হওয়া মামলার এজাহারনামীয় আসামি। কিন্তু রকি নামের এক যুবক তার পরিবর্তে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা খাটছেন।





আইনজীবীর মাধ্যমে ‘রকি’ নিজেকে মো. আজাদ পরিচয় দিয়ে আদালতে ওই মামলায় আত্মসমর্পণ করেন। আইনজীবীর কাছে ‘রকি’ পরবর্তীতে স্বীকার করেছেন তিনি ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে আজাদের পরিবর্তে আত্মসমর্পণ করেছেন। ওই আইনজীবী এমন জালিয়াতি ও প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে আজাদ তথা ‘রকি’র মামলা লড়বেন না বলে আদালতকে জানিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।  





মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে দায়ের হওয়া মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. আজাদ পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার কাছে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন, অ্যাডভোকেট মো. আরিফুর জামান আরিফ। তিনি নিজেকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন হারবাং এলাকার মো. আব্বাসের ছেলে মো. আজাদ বলে আমার কাছে পরিচয় দেন এবং ওই মামলায় আইনগত সহায়তা চেয়ে অনুরোধ করেন। আজাদ পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি আমার মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু পরে আমি জানতে পারি ওই ব্যক্তি মূল আসামি আজাদ নন এবং এ মামলার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।  





এমন জালিয়াতি ও প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে আমি আদালতকে জানাই এ মামলা আমি লড়বো না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানায়, অ্যাডভোকেট মো. আরিফুর জামান আরিফ। এমনকি তার পক্ষে পরবর্তী কোনো তারিখে আদালতে মুভও করিনি। তাকে যখন আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন তার কাছে আমি জানতে চাই- তিনি কেন নিজেকে আজাদ পরিচয় দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন? ওই ব্যক্তি তখন আমাকে জানান- ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে আজাদের পরিবর্তে তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন।  





জানাজানি হয় যেভাবে
‘রকি’ নামে ওই ব্যক্তি মো. আজাদ পরিচয় দিয়ে ২ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট মো. আরিফুর জামান আরিফের মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদনও করেন তিনি। কিন্তু আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  





মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুল ইসলাম ২১ সেপ্টেম্বর মো. আজাদ পরিচয় দিয়ে কারাগারে থাকা ওই ব্যক্তিকে ২ দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসেন।





ওই ব্যক্তি রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিতে থাকেন। পরে জামিনে থাকা ২ নম্বর আসামি নুর হোসেনকে পুলিশ এ মামলায় তার বিষয়ে জানতে চাইলে নুর হোসেন ওই ব্যক্তি এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. আজাদ নয় বলে শনাক্ত করেন। পরে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তার নাম ‘রকি’ বলে স্বীকার করেন।  





পুলিশের কাছে ‘রকি’ জানায়, তিনি কোতোয়ালী থানাধীন কর্ণফুলী নামে একটি হোটেলে বয় হিসেবে চাকরি করতেন এবং তিনি কখনও হোটেল ইমামগঞ্জ আবাসিকের মালিক বা পার্টনার ছিলেন না।  





পুুলিশ আসল আজাদকে খুঁজছে
মো. আজাদ পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করা ‘রকি’র সম্পর্কে জানতে পেরে এখন এ মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. আজাদকে খুঁজছে পুলিশ।  





চকবাজার থানার এসআই মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. শামসুল ইসলাম বলেন, আত্মসমর্পণ করা ব্যক্তি মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. আজাদ নয় বলে নিশ্চিত হয়েছি। আমরা মূল আসামি মো. আজাদকে খুঁজছি। যে ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেছে তিনি কেন এ কাজ করলেন সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি।  





চকবাজার এলাকায় হোটেল ইমামগঞ্জ আবাসিকে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর চকবাজার থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই ভিকটিম কিশোরীকে উদ্ধার করে। মো. আজাদসহ  (৩০) আট জনের বিরুদ্ধে সেখানে নারীদের দিয়ে অবৈধ দেহ ব্যবসার দায়ে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলা নম্বর: ০৬(১২)১৯। এ মামলায় পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল। পলাতক ছিলেন প্রধান আসামি মো. আজাদসহ তিনজন।  





কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন হারবাং এলাকার মো. আব্বাসের ছেলে মো. আজাদ। তিনি চকবাজার এলাকার হোটেল ইমামগঞ্জ আবাসিকের মালিক। এ হোটেলে নারীদের দিয়ে অবৈধ দেহ ব্যবসা করানো হতো। 





আরও পড়ুনঃ বিয়ে করার শর্তে জামিন দেওয়া হলো তরুণীর ধর্ষককে





চকবাজার থানায় মো. আজাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও একটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।


1 comment:

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here